Header Ads Widget


বন্ধ্যাত্ব (INFERTILITY) : কারন, লক্ষণ ও তার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

বন্ধ্যাত্ব (Infertility) কি?

বন্ধ্যাত্ব বলতে বোঝায়, বিয়ের পর সম্পূর্ণ এক বছর পার হয়ে গেলে স্বামী-স্ত্রী দুজনে সন্তানের জন্য উদগ্রীব হওয়া সত্ত্বেও তাদের কোন সন্তান না হওয়া। আবার অনেকে বলেন যে, যদি নারীর সন্তান ধারণ একেবারে অসম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়, তাহলে সেটাই বন্ধাত্ব। কিন্তু যদি চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে নারী সন্তান লাভ করতে পারে তাহলে তা ঠিক প্রকৃত বন্ধ্যাত্ব নয়।

বন্ধ্যাত্বের শ্রেণী বিভাগ

উপর উল্লেখ্য বিষয় বিবেচনায় বন্ধ্যাত্বকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়ঃ-

(১) প্রাথমিক বন্ধ্যাত্ব 

     অর্থাৎ বিয়ের পর থেকে কোন সন্তান লাভ একেবারে না করা।

(২) সাময়িক বন্ধ্যাত্ব

অর্থাৎ বিয়ের পর একটি সন্তান হয়ে গেলে তারপর  চিরদিনের মত আর সন্তান না হওয়া। এই ধরনের ক্যাপলদের প্রথম অবস্থায় বন্ধ্যাত্ব না হলেও পরবর্তী কালে বন্ধ্যাত্ব ধরা হয়।


বন্ধ্যাত্বের কারন 

বিভিন্ন কারনে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। যেমন-
  • টেসটিস অবশ্য সুস্থ শুক্রকিট সৃষ্টি করবে।
  • ওভারী অবশ্য সুস্থ ওভাম সৃষ্টি করবে।
  • শুক্রকিট ও ডিম্বানুর ঠিকমত মিলন হবে।
উপরের তিনটি FACTOR- এর কোনও একটির অভাব হলে সন্তান সৃষ্টি হয় না।

ফিজিওলজিক্যাল কারন

কখনো কখনো স্বাভাবিক নিয়মেইনারীর সন্তান ধারন সম্ভব হয় না। যেমন-
  • ডিম্বকোষে ডিম্ব উৎপাদনের বয়স না হলে।
  • নারীর বেশী বয়সে মেনপোজ হয়ে গেলে।
  • নারী গর্ভবতী থাকলে নতুন সন্তান হবে না।
  • কখনো কখনো নারীর দুগ্ধ চলাকালীন সময়ে নারী সন্তানবতী হয় না।

প্যাথলজিক্যাল কারন 

  • পুরুষের শুক্রকিটের ক্রোমজম ঠিকমত xy বা xx ভাবে না থাকা- অর্থাৎ সন্তান ধারনের উপযুক্ত ক্রোমজম সৃষ্টি না হওয়া।
  • ডিম্বকোষে পূর্ণ সন্তান সৃষ্টির মত ডিম্ব সৃষ্টি না হওয়া।
  • শুক্রকিট ও ডিম্বের মিলন ঠিকমত না হওয়া
  • বিভিন্ন রোগের কারনে সন্তান সৃষ্টির ক্ষমতা লুপ্ত হওয়া।

পুরুষের জন্য কারন 

  • ডায়াবেটিস রোগ।
  • যৌন ক্ষমতা কমে যাওয়া।
  • এন্ডোক্রাইন গ্রন্থির জন্য- থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ কম হলে, পিটুইটারীর কাজ কম হলে, এবং পুরুষ বেশী মোটা বা ফ্যাটি হয়ে গেলে।
  • মানসিক অবস্থা-       পুরুষের সঙ্গে নারীর মনের মিল না হওয়া
                                         নারীর যৌন জীবনে অনীহা থাকা
                                          অন্য নারীর প্রতি আকর্ষণ ছিল কিন্তু তাকে বিবাহ করতে পারেনি বলে মনে                                                 দুঃখ থাকা ইত্যাদি।তবে এর পরিমান খুব কম।
  • জেনিটাল কারন-

  1. টেস্টিস ঠিকমত গঠিত না হওয়া।
  2. দীর্ঘদিন জটিল রোগ-ব্যাধিতে ভোগা, যেমন- কালাজ্বর,ম্যালেরিয়া,টাইফয়েড, বসন্ত প্রভৃতি।
  3. অতিরিক্ত গরমে কাজ করা।
  4. যৌনাঙ্গের রোগ- গনোরিয়া, সিফিলিস প্রভৃতি।
  5. জন্মগত বীর্যে শুক্রকিট না থাকা।
  6. একশিরা, হাইড্রোসিল, ফাইলেরিয়া প্রভৃতিতে ভোগা।
  7. যৌন মিলনের ভূল প্রথা। যেমন- ঠিকমত বীর্য জরায়ূতে প্রবিষ্ট না হয়া।তবে এটি খুব কম হয়।

নারীর জন্য কারন  

  •  ডায়াবেটিস রোগ
  • নারীর অতিরিক্ত রক্তশুন্যতা, দৈহিক অপুষ্টি, প্রভৃতির জন্য সন্তান ধারনে অক্ষমতা স্বাভাবিক।
  • হর্মোন জনিত বাধা- পুরুষের মত নারীরও হর্মোনাল ইম্বালান্স, অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়া, ঋতু না হওয়া, বাধক প্রভৃতি।
  • মানসিক কারন- আঘাত, শোক, পুরুষের প্রতি বিরক্তি, সন্তান ভীতি প্রভৃতি।
  • জেনিটাল কারন-
  1. যোনীর জন্মগত অপরিণতি, যোনী ক্রিয়াশীল না থাকা প্রভৃতি।
  2. সারভিক্স ঠিকমত না থাকা বা রোগগ্রস্ত সারভিক্স।
  3. সারভিক্স উপরে উঠে যায় ও তার জন্য যৌন ক্রিয়াতে ব্যাঘাত।
  4. জরয়ুর কাজের গোলমাল, তার গঠন ঠিকমত না হওয়া।
  5. জরায়ুর সন্তান ধারনে অক্ষমতা, তার সঙ্গে যোনিনালীর সম্পর্ক না থাকা।
  6. ডিম্বনালীতে অবস্ট্রাকশন জনিত বাধা। ওভারীর কাজ ঠিকমত না হওয়া, ওভারিয়ান টিউমার।
  7. গনোরিয়া, সিফিলিস প্রভৃতি রোগ।

বন্ধ্যাত্বের রোগ নির্ণয়

ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা

স্বামীর পরীক্ষাঃ

  • স্বামীকে পরীক্ষা করতে গেলে তার ইতিহাস ভালভাবে নিতে হবে। তার যৌনতন্ত্র গঠন ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে।
  • স্বামীর cell নিউক্লিয়াসে xy ক্রোমজোম ঠিকমত আছে কিনা দেখতে হবে।
  • বীর্যে শুক্রকিট আছে কিনা দেখতে হবে।
  • বীর্যের মোটালিটি নির্দিষ্ট মাত্রায় আছে কিনা দেখতে হবে।
  •  গনোরিয়া , সিফিলিস ইত্যাদি জাতীয় কোন যৌন রোগ কখনও হয়েছিল কিনা

স্ত্রীর পরীক্ষাঃ

  • বয়স এবং পেশা। যদি বয়স ৩৫ এর বেশী হয় এবং কর্মশীল না হয়, তাহলে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
  • লিউকোরিয়া, জরায়ু বা যোনীর গোলমাল জনিত নানা রোগ থেকে বন্ধ্যাত্ব আসতে পারে।
  • মাসিক ঠিক মত হচ্ছে কি না  তা দেখা কর্তব্য।
  • যোনীতে কোন অপারেশন হয়েছিল কিনা 
  • গনোরিয়া , সিফিলিস ইত্যাদি জাতীয় কোন যৌন রোগ কখনও হয়েছিল কিনা 

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা (HOMEOPATHIC TREATMENT)

  • কোনিয়াম  বন্ধ্যাত্বের উৎকৃষ্ট ঔষধ- ডিম্বকোষের ক্ষীণতার জন্য বন্ধ্যাত্ব।
  • বোরাক্স  তীব্র শ্বতপ্রদর যুক্ত বন্ধ্যাত্ব
  • হেলোনিয়াস  সঙ্গম শক্তি লোপ, জরায়ুর স্থানচ্যুতি,  জরায়ু গ্রীবায় ক্ষত, প্রচুর রজঃস্রাব সহ বন্ধ্যাত্ব।
  • সিপিয়া
  • ফসফরাস
  • নেট্রাম মিউর
  • কার্বভেজ
  • লাইকোপডিয়াম
  • মেডোরিনাম
  • সিফিলিনাম

Post a Comment

2 Comments

  1. কোথায় একজন ভালো হুমিও ডাঃ পাবো infertily বিশেষজ্ঞ?

    ReplyDelete